১৯১০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বরিশাল জেনারেল হাসপাতাল। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
এই হাসপাতাল থেকে যে সব সেবা দেয়া হয় তা হলোঃ
♦ চিকিৎসা (বহির্বিভাগ,অন্তর্বিভাগ ও জরুরি বিভাগ)
♦ চোখ,নাক-কান-গলা ও দাঁতের চিকিৎসা
♦ শয্যা,ওষুধ,খাবার ও রক্ত সরবরাহ
♦ শিশুরোগ ও মেডিসিনের সকল সমস্যা
♦ প্যাথলজি ও ডায়াগনস্টিক টেস্ট
♦ গাইনোকোলজিক্যাল সার্জারি ও সকল প্রকার জেনারেল সার্জারি
♦ চোখের সার্জারি এবং নাক,কান ও গলা সার্জারি
♦ গর্ভকালীন,প্রসব ও প্রসবোত্তর সেবা
♦ টিকা/ইপিআই সংক্রান্ত সেবা
♦ পানিশূন্যতা,বয়স্ক ডায়রিয়া রোগীদের সেবা প্রদান
♦ অ্যাম্বুলেন্স সেবা
♦ ভায়া সেন্টার (মহিলাদের জরায়ু ক্যান্সারের পূর্ব সনাক্তকরণ ফ্রি পরীক্ষা)
♦ পরিবার-পরিকল্পনা সেবা
এ হাসপাতালে যেসব অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা রয়েছে তার একটি চিত্র নিম্নে দেয়া হলোঃ
♦ ওয়ার্ড ০৭টি
♦ সাধারন শয্যা (বেড) ৫০টি
♦ পেয়িং বেড ৫০টি
♦ কেবিন ০৪টি (ভি.আই.পি-১এবং সাধারন ৩টি)
♦ ট্রলি ০৪টি (সচল ১টি)
♦ অক্সিজেন সিলিন্ডার ৫৪টি
♦ টয়লেট ৩০টি (১১টি নারী,১১টি পুরুষ,০৮টি সাধারন)
হাসপাতালে রোগী দেখা ও ভর্তির নিয়মাবলীঃ
♦ বহির্বিভাগ সকাল ৮:০০ থেকে দুপুর ২:৩০ টা পর্যন্ত সেবা দেয়া হয়, সপ্তাহে ৬ দিন। শুক্রবার সহ অন্যান্য সরকারী ছুটির দিন বন্ধ।
♦ অন্তর্বিভাগ ও জরুরী বিভাগ ২৪ ঘন্টা খোলা এবং প্রতিদিন সেবা দেয়া হয়।
ভর্তি ফি/টিকেটঃ
♦ বহির্বিভাগ ও জরুরী বিভাগ এ রোগী দেখানোর ফি হচ্ছে ৬.০০ টাকা
♦ অন্তর্বিভাগ এ ভর্তি ফি হচ্ছে ১১.০০ টাকা (এখানে ১ টাকা করে সমাজকল্যাণ ফি সহ নেয়া হয়)।
অপারেশন চার্জঃ
সাধারন বেডের মেজর, মাইনর, ডেলিভারী বিনা মূল্যে করানো হয়।
কেবিনে মেজর অপারেশন ফি ২০০০ টাকা, মাইনর অপারেশন ফি ১০০০ টাকা, ডেলিভারী ১০০০ টাকা।
পেয়িং বেড মেজর অপারেশন ফি ১০০০ টাকা,মাইনর অপারেশন ফি ৫০০ টাকা, ডেলিভারী ৫০০ টাকা।
খাবার সরবরাহ
**সাধারন বেডের জন্য সকালে কলা, ব্রেড, ডিম দুপুরে সব্জী, মাছ/মাংস, ডাল এবং রাতে সব্জী,মাছ/মাংস,ডাল বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হয়।
**(বিশেষ দিবসে উন্নত মানের খাবার দেয়া হয়)।
বিভিন্ন ধরনের টেস্ট ফিঃ
**সরকারী সরবরাহ অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত মূল্যে করানো হয়।
সার্টিফিকেট
ময়না তদন্ত,ধর্ষনের পরে ডাক্তারী রিপোর্ট করা হয় না।
রিলিজ ও ডেথ সার্টিফিকেট ফ্রি করানো হয়।
মারামারি এবং এ ব্যাপারে মামলা সংক্রান্ত ডাক্তারী সার্টিফিকেট আদালত বা থানা চাইলে ফ্রি দেয়া হয়।
সেবাদানকারীদের তথ্য
ডাক্তারের মোট পদ হচ্ছে ৩২ টি।এর মধ্যে ১৫ টি শূন্য পদ সহ কর্মরত আছে ২২ জন।
দ্বিতীয় শ্রেনীর কর্মচারীর পদ ০১ টি এবং এটি শূন্য অবস্থায় আছে।
তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারীর ৮৪ টি পদের মধ্যে ০৩ টি শূন্য পদ সহ কর্মরত আছে ৮১ জন।
চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীর ৪৬ টি পদের ১৭ টি শূন্য পদ সহ কর্মরত আছে ২৯ জন।
তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারীর মধ্যে সিস্টার ৬৩ জন এবং ব্রাদার আছে ০৬ জন।
চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীর মধ্যে আয়া/ওয়ার্ড বয় ২১ জন,সুইপার ৭ জন কর্মরত আছে। (আয়ার ৭টি এবং সুইপারের ৯টি পদ খালি আছে)।
অ্যাম্বুলেন্স সেবাঃ
সিটি কর্পোরেশনের ভিতরে যে কোন স্থানে ৩০০টাকা এবং সিটি কর্পোরেশনের বাইরে প্রতি কিলোমিটার ১০ টাকা রেটে সেবা দেয়।
৩টি অ্যাম্বুলেন্সের বর্তমানে ২টি সচল এবং ১টি অচল অবস্থায় আছে।
সমাজ কল্যান বিভাগ/রোগী কল্যান সমিতিঃ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে একটি রোগী কল্যান সমিতি আছে।এখান থেকে অসহায় ও দুঃস্থ রোগীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। সমাজ কল্যান বিভাগ থেকে প্রদত্ত সেবাসমূহ হলোঃ
রোগীকে আর্থিক ও মানসিক সাহায্য ও সহানুভূতি প্রদান
চিকিৎসার সুযোগ ও পরামর্শ প্রদান
চিকিৎসা সম্পর্কিত বিভিন্ন পরীক্ষায় সহায়তা প্রদান
পুষ্টিকর খাদ্য,বস্ত্রসহ চিকিৎসা পরবর্তী পুনর্বাসন
উপরে উল্লেখিত সেবাসমূহ জনগন এই প্রতিষ্ঠান থেকে পায়।প্রতিষ্ঠানের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার একেএম সামছউদ্দিন এর সাথে প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কথা বললে অনেক সমস্যার কথা বলেন, যেমন আমাদের আউটডোরে অনেক রেগী হয়, কিন্তু রোগীদের বসার জায়গা দিতে পারিনা, প্রয়োজনের তুলনায় রুম সংখ্যা কম।
বরিশাল সদর হাসপাতালের মূল ভবনে বিভাগীয় পরিচালকের (স্বাস্থ্য) স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেখানে হাসপাতালের কর্যক্রম পরিচালনার জন্য আরো রুম প্রয়োজন, সেখানে পরিচালকের স্থান কোথায় হবে এ প্রশ্ন বরিশাল বাসীর?
এখানে পরিচালকের দপ্তর করা হলে ঐ ভবনে দন্ত,চক্ষু, শিশু বিভাগ সহ চিকিৎসা প্রদানে সংকট তৈরী হবে। যার প্রভাবে শিকার হবে সাধারন জনগোষ্ঠীসহ সুবিধা বঞ্চিত অবহেলিত মানুষ। তাই সদর হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা যাতে করে ব্যাহত না হয় এবং অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের দপ্তর ফের এখানে আসতে না পারে এর প্রতিবাদে জেলা স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন কমিটির নের্তৃত্বে ০২ ফেব্রুয়ারী ’১১ তারিখ সকাল ১০ টায় হাসপাতাল সম্মুখে মানব বন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য ইতিপূর্বে এখানে হাইকোর্টের দপ্তর স্থাপন হয়েছিল এবং জনগন সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাই সুশিল সমাজ সহ বরিশাল বাসীর সরকারের কাছে দাবি এখানে আর কোন দপ্তর যেন স্থাপন না হয়। সরকারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত বরিশাল বাসী আন্দোলন করে যাবে তাদের শত বছরের প্রতিষ্ঠান সদর হাসপাতালের বৈশিষ্ট রক্ষার জন্য।
আফরোজা আখতার শিউলি
সরকারী সেবার মানোন্নয়নে নাগরিক অংশগ্রহন প্রকল্প।
পপুলেশন সার্ভিসেস এন্ড ট্রেনিং সেন্টার, পিএসটিসি
বাবুগঞ্জ, বরিশাল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন