বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

শত বছরের প্রতিষ্ঠান রক্ষার দাবী



১৯১০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বরিশাল জেনারেল হাসপাতাল। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

এই হাসপাতাল থেকে যে সব সেবা দেয়া হয় তা হলোঃ                                                                                
♦ চিকিৎসা (বহির্বিভাগ,অন্তর্বিভাগ ও জরুরি বিভাগ)                      
♦ চোখ,নাক-কান-গলা ও দাঁতের চিকিৎসা
♦ শয্যা,ওষুধ,খাবার ও রক্ত সরবরাহ
♦ শিশুরোগ ও মেডিসিনের সকল সমস্যা
♦ প্যাথলজি ও ডায়াগনস্টিক টেস্ট
♦ গাইনোকোলজিক্যাল সার্জারি ও সকল প্রকার জেনারেল সার্জারি
♦ চোখের সার্জারি এবং নাক,কান ও গলা সার্জারি
♦ গর্ভকালীন,প্রসব ও প্রসবোত্তর সেবা
♦ টিকা/ইপিআই সংক্রান্ত সেবা
♦ পানিশূন্যতা,বয়স্ক ডায়রিয়া রোগীদের সেবা প্রদান
♦ অ্যাম্বুলেন্স সেবা
♦ ভায়া সেন্টার (মহিলাদের জরায়ু ক্যান্সারের পূর্ব সনাক্তকরণ ফ্রি পরীক্ষা)
♦ পরিবার-পরিকল্পনা সেবা    

এ হাসপাতালে যেসব অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা রয়েছে তার একটি চিত্র নিম্নে দেয়া হলোঃ
♦ ওয়ার্ড                                           ০৭টি
♦ সাধারন শয্যা  (বেড)                         ৫০টি
♦ পেয়িং বেড                                     ৫০টি
♦ কেবিন                                          ০৪টি (ভি.আই.পি-১এবং সাধারন ৩টি)
♦ ট্রলি                                             ০৪টি (সচল ১টি)  
♦ অক্সিজেন সিলিন্ডার                           ৫৪টি
♦ টয়লেট                                         ৩০টি (১১টি নারী,১১টি পুরুষ,০৮টি সাধারন)

হাসপাতালে রোগী দেখা ও ভর্তির নিয়মাবলীঃ
♦ বহির্বিভাগ সকাল ৮:০০ থেকে দুপুর ২:৩০ টা পর্যন্ত সেবা দেয়া হয়, সপ্তাহে ৬ দিন। শুক্রবার সহ অন্যান্য সরকারী ছুটির দিন বন্ধ।   
♦ অন্তর্বিভাগ ও জরুরী বিভাগ ২৪ ঘন্টা খোলা এবং প্রতিদিন সেবা দেয়া হয়।

ভর্তি ফি/টিকেটঃ                                                   
♦ বহির্বিভাগ ও জরুরী বিভাগ এ রোগী দেখানোর ফি হচ্ছে ৬.০০ টাকা 
♦ অন্তর্বিভাগ এ ভর্তি ফি হচ্ছে ১১.০০ টাকা (এখানে ১ টাকা করে সমাজকল্যাণ ফি সহ নেয়া হয়)।

অপারেশন চার্জঃ
সাধারন বেডের মেজর, মাইনর, ডেলিভারী বিনা মূল্যে করানো হয়।
কেবিনে মেজর অপারেশন ফি ২০০০ টাকা, মাইনর অপারেশন ফি ১০০০ টাকা, ডেলিভারী ১০০০ টাকা।
পেয়িং বেড মেজর অপারেশন ফি ১০০০ টাকা,মাইনর অপারেশন ফি ৫০০ টাকা, ডেলিভারী ৫০০ টাকা।

খাবার সরবরাহ                                                                 
**সাধারন বেডের জন্য সকালে কলা, ব্রেড, ডিম দুপুরে সব্জী, মাছ/মাংস, ডাল এবং রাতে সব্জী,মাছ/মাংস,ডাল বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হয়।
**(বিশেষ দিবসে উন্নত মানের খাবার দেয়া হয়)।

বিভিন্ন ধরনের টেস্ট ফিঃ
**সরকারী সরবরাহ অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত মূল্যে করানো হয়।

সার্টিফিকেট
ময়না তদন্ত,ধর্ষনের পরে ডাক্তারী রিপোর্ট করা হয় না।
রিলিজ ও ডেথ সার্টিফিকেট ফ্রি করানো হয়।
মারামারি এবং এ ব্যাপারে মামলা সংক্রান্ত ডাক্তারী সার্টিফিকেট আদালত বা থানা চাইলে ফ্রি দেয়া হয়।

সেবাদানকারীদের তথ্য
ডাক্তারের মোট পদ হচ্ছে ৩২ টি।এর মধ্যে ১৫ টি শূন্য পদ সহ কর্মরত আছে ২২ জন।
দ্বিতীয় শ্রেনীর কর্মচারীর পদ ০১ টি এবং এটি শূন্য অবস্থায় আছে।
তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারীর ৮৪ টি পদের মধ্যে ০৩ টি শূন্য পদ সহ কর্মরত আছে ৮১ জন।
চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীর ৪৬ টি পদের ১৭ টি শূন্য পদ সহ কর্মরত আছে ২৯ জন।
তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারীর মধ্যে সিস্টার ৬৩ জন এবং ব্রাদার আছে ০৬ জন।
চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীর মধ্যে আয়া/ওয়ার্ড বয় ২১ জন,সুইপার ৭ জন কর্মরত আছে। (আয়ার ৭টি এবং সুইপারের ৯টি পদ খালি আছে)।

অ্যাম্বুলেন্স সেবাঃ
সিটি কর্পোরেশনের ভিতরে যে কোন স্থানে ৩০০টাকা এবং সিটি কর্পোরেশনের বাইরে প্রতি কিলোমিটার ১০ টাকা রেটে সেবা দেয়।
৩টি অ্যাম্বুলেন্সের বর্তমানে ২টি সচল এবং ১টি অচল অবস্থায় আছে।

সমাজ কল্যান বিভাগ/রোগী কল্যান সমিতিঃ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে একটি রোগী কল্যান সমিতি আছে।এখান থেকে অসহায় ও দুঃস্থ রোগীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। সমাজ কল্যান বিভাগ থেকে প্রদত্ত সেবাসমূহ হলোঃ
রোগীকে আর্থিক ও মানসিক সাহায্য ও সহানুভূতি প্রদান
চিকিৎসার সুযোগ ও পরামর্শ প্রদান
চিকিৎসা সম্পর্কিত বিভিন্ন পরীক্ষায় সহায়তা প্রদান
পুষ্টিকর খাদ্য,বস্ত্রসহ চিকিৎসা পরবর্তী পুনর্বাসন

উপরে উল্লেখিত সেবাসমূহ জনগন এই প্রতিষ্ঠান থেকে পায়।প্রতিষ্ঠানের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার একেএম সামছউদ্দিন এর সাথে প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কথা বললে অনেক সমস্যার কথা বলেন, যেমন আমাদের আউটডোরে অনেক রেগী হয়, কিন্তু রোগীদের বসার জায়গা দিতে পারিনা, প্রয়োজনের তুলনায় রুম সংখ্যা কম।

বরিশাল সদর হাসপাতালের মূল ভবনে বিভাগীয় পরিচালকের (স্বাস্থ্য) স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেখানে হাসপাতালের কর্যক্রম পরিচালনার জন্য আরো রুম প্রয়োজন, সেখানে পরিচালকের স্থান কোথায় হবে এ প্রশ্ন বরিশাল বাসীর?

এখানে পরিচালকের দপ্তর করা হলে ঐ ভবনে দন্ত,চক্ষু, শিশু বিভাগ সহ চিকিৎসা প্রদানে সংকট তৈরী হবে। যার প্রভাবে শিকার হবে সাধারন জনগোষ্ঠীসহ সুবিধা বঞ্চিত অবহেলিত মানুষ।  তাই সদর হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা যাতে করে ব্যাহত না হয় এবং অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের দপ্তর ফের এখানে আসতে না পারে এর প্রতিবাদে জেলা স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন কমিটির নের্তৃত্বে ০২ ফেব্রুয়ারী ’১১ তারিখ সকাল ১০ টায় হাসপাতাল সম্মুখে মানব বন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য ইতিপূর্বে এখানে হাইকোর্টের দপ্তর স্থাপন হয়েছিল এবং জনগন সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাই সুশিল সমাজ সহ বরিশাল বাসীর সরকারের কাছে দাবি এখানে আর কোন দপ্তর যেন স্থাপন না হয়। সরকারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত বরিশাল বাসী আন্দোলন করে যাবে তাদের শত বছরের প্রতিষ্ঠান সদর হাসপাতালের বৈশিষ্ট রক্ষার জন্য।


আফরোজা আখতার শিউলি
সরকারী সেবার মানোন্নয়নে নাগরিক অংশগ্রহন প্রকল্প।
পপুলেশন সার্ভিসেস এন্ড ট্রেনিং সেন্টার, পিএসটিসি
বাবুগঞ্জ, বরিশাল।

শনিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

নদীর বালি নির্ভর জীবিকা


সুজলা-সুফলা শস্য শ্যামল আমাদের এই দেশ। এদেশ ভূগর্ভস্থ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। নদীমাতৃক এই দেশের নদীতেও রয়েছে প্রাকৃতিক সম্পদের বিপুল সম্ভার।
দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড় বালি এবং পাথরের জন্য খ্যাত। পঞ্চগড়ের নদীগর্ভ থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ বালি ও পাথর তোলা হয়। বিশ্বায়নের এ যুগে অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে দিন দিন বাড়ছে নির্মাণ সামগ্রীর চাহিদা। আর পাথর-বালি ব্যতিত উন্নয়নের কথা চিন্তা করা যায়না।পঞ্চগড়ের বিপুল জনগোষ্ঠীর মানুষ নদী থেকে বালি উত্তোলন করে জীবিকা নিবার্হ করছে।

পঞ্চগড় জেলায় যে সকল নদী থেকে বালি উত্তোলন করা হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি নদী হচ্ছে হাফিজাবাদ তালমা নদী । এ নদীটি ভারতে উৎপন্ন হয়ে ভিতরগড় সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। অত্যন্ত ক্ষীণ গতিতে প্রবাহিত হয়ে নদীটি পঞ্চগড় পৌরসভার পূর্ব জালাশীতে এসে করতোয়ার সাথে মিশে তালমা নদী নামে পরিচিতি লাভ করেছে।এ নদীর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে রাস্তার পিচ ঢালাই করতে যে মোটা বালি ব্যবহার করা হয় তা এখানে পাওয়া যায়। জেলা শহর থেকে মাত্র তিন কি.মি. দূরে অবস্থান। সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের পাঁচটি পয়েন্ট থেকে মোটা বালি উত্তোলন করা হয়। পঞ্চগড়ের চাহিদা মিটিয়ে এ বালি রংপুর দিনাজপুর সহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ট্রাকযোগে পাঠানো হয়। তালমা নদীটি শূল রাস্তা বরাবর ঘেষে থাকায় পরিবহন ব্যবস্থায় রয়েছে সুবিধা। বালি উত্তোলনকারী মোঃ বেলাল (৪০) মোঃ শফিক (৩২) মোঃ আউয়াল (৩৫) ও সুরেশ চন্দ্র (৩৫) জানালেন বালির সাথে তাদের সখ্যতার কথা। তারা প্রথমে নদী থেকে নৌকায় বালি তুলেন। পরে নৌকা তীরে নিয়ে তা থেকে রাস্তার পাশে বালি নিয়ে আসেন। উত্তোলনকারী মোঃ রফিক জানালেন প্রতি ট্রাক বালি তারা ২৪০০ টাকা দরে বিক্রি করেন। এতে গড়ে আয় হয় ১৮০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। তালমা নদীর পাঁচটি পয়েন্টে গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ জন শ্রমিক বালি উত্তোলন করেন। বছরে প্রায় আট মাস তারা এ কাজ করেন। বর্ষা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই তারা নদীতে চরে আসেন। নদীতে প্রতিদিন তারা ৬-৭ ঘন্টা পর্যন্ত উঠানামা করেন। কারো অধীনস্থ না হয়ে আর শান্ত এই নদীতে সারাদিন থাকতে তারা কখনোই ক্লান্তিবোধ করেন। বালির বাধ দিয়ে নদী সংকুচিত করে স্রোত ব্যবহার করে তারা নদী থেকে বালি উত্তোলন করেন। বালির বাধ ক্ষণস্থায়ী নয় বরং দিয়েছে দীর্ঘস্থায়ী জীবিকার নিশ্চয়তা। পাহাড়ী ঢল নেমে আসায় এ নদীতে বালি উত্তোলনকারী দের দেখা যাচ্ছে। ছবিটি পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা নদী থেকে সংগৃহীত ।
পঞ্চগড় থেকে
মো বায়েজিদ বোস্তামী বাবু(স্বেচ্ছাসেবক)।

বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১১

প্রকৌশল শাস্ত্রে উচ্চশিক্ষার নবদিগন্ত

দেশে প্রতি বৎসর হাজার হাজার মেধাবী ছাত্র- ছাত্রী এইস.এস.সি তে ভালো রেজাল্ট করে পাশ করছে। এদের অধিকাংশরই ইচ্ছে থাকে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ার। কিন্তু এই বিপুল সংখ্যক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বিপরীতে সরকারি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় আছে মাত্র ৪ টি। আর এই প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও আসন সংখ্যা খুবই সীমিত। ফলে এই বিপুল সংখ্যক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। আর প্রযুক্তিগত শিক্ষার প্রসারের অভাবে বহি:বিশ্বের সাথে আমাদের দেশ তাল মিলিয়ে অগ্রসর হতে পারছে না। এসবদিক বিবেচনা করে দেশে প্রযুক্তিগত শিক্ষার প্রসারের জন্য সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ।

শুরুরকথাঃ
মূল শহর থেকে আনুমানিক ৭কিমি দূরে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে অত্যাধুনিক ডিজাইনের বিশাল বিশাল বেশ কয়েকটি বিল্ডিং নিয়ে ৬.২ একর জায়গায় ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অত্যন্ত আভিজাত্যর্পূণ ও মনোমুগ্ধকর এই ক্যাম্পাস ।

এ কলেজটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদের অধিভূক্ত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ৬০জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করানোর মাধ্যমে শুরু হয় এই কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম। বর্তমানে এ কলেজে শুধুমাত্র ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ চালু আছে। বর্তমানে কলেজটিতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এই তিন বিভাগের জন্য তিনটি ডিপার্টমেন্টাল ভবন, ২টি ছাত্রহল, ১টি ছাত্রীহল, শিক্ষকদের আবাসিক ভবন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবন ও ১টি লাইব্রেরী ভবন নিয়ে সর্বমোট ১৩টি ভবন রয়েছে। ২টি ছাত্রহল এবং ১টি ছাত্রীহলে প্রায় ৫০০ জন ছাত্র-ছাত্রীর আবাসন সুব্যাবস্থা আছে। ৫ তলাবিশিষ্ট প্রতিটি ডিপার্টমেন্টাল ভবনে রয়েছে অত্যাধুনিক মানের অনেকগুলো ল্যাবরেটরী। ৫ তলাবিশিষ্ট লাইব্রেরী ভবনে রয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সভূক্ত শত শত দেশী-বিদেশী বই সম্বলিত ১টি স্টাডি কক্ষ, ১টি সেমিনার কক্ষ, এছাড়াও লাইব্রেরী ভবনে রয়েছে সর্বক্ষন অনলাইনে পড়াশুনা করার সুবিধা। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাকটিক্যাল ক্লাসের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ইতিমধ্যে এসে গেছে, ফলশ্রুতিতে আগামী বৎসর থেকে এই ২টি বিভাগ চালু হবে বলে জানা যায়। বর্তমানে কলেজটিতে শিক্ষক সংকট বিরাজমান। ফলে পড়ালেখার মানের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কয়েকজন শিক্ষককে অতিথি শিক্ষক হিসেবে এবং কয়েকজন শিক্ষককে প্রেষণে এখানে আনা হয়েছে । বর্তমানে এখানে মোট ১৭জন শিক্ষক নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন । কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড.রতন কুমার নন্দী স্যারের কাছে থেকে জানা গেল, কলেজের যেকোনো সমস্যা নিরসনে এখানকার ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলে মিলে একত্রে আন্তরিক ভাবে কাজ করা হয়। এভাবে নতুন কলেজের অনেক সমস্যার সহজে সমাধান করা সম্ভব হয়েছে । ছেলে-মেয়েরাও পড়ালেখার ব্যাপারে যত্নবান ।ইতোমধ্যে ১ম ব্যাচের ৩৫জন শিক্ষার্থী ১ম সেমিষ্টার পরীক্ষায় ভাল ফল করার জন্য বিশেষ বৃওি লাভ করেছে যা নবীণ এই কলেজের উচ্চ মানের পাঠদনের বিষয়টি প্রমাণ করে ।
ভর্তি প্রক্রিয়াঃ
এই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হতে গেলে ভর্তি পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয় । এস.এস.সি এবং এইস.এস.সি তে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মোট জিপিএ ৮ (৪র্থ বিষয় বাদে) পেলে এবং এইস এস সি তে গনিত,পদার্থ ও রসায়ন প্রতিটি বিষয়ে জিপিএ ৪ পেলে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আবেদন করা যায় । এছাড়া ইংরেজি মাধ্যমের ছাত্র- ছাত্রীদের আবেদন করার ক্ষেত্রে GEO 'O' লেভেল এবং GEO 'A' লেভেল এ পদার্থ, রসায়ন, গনিত, ইংরেজিসহ ৫টি বিষয়ে গড়ে B গ্রেড পেতে হবে তবে GEO 'A' লেভেলে পদাথ , রসায়ন, গনিত এই তিনটি বিষয়ের মধ্যে দুইটি বিষয়ে অবশ্যই 'A' গ্রেড থাকতে হবে । বর্তমানে এ কলেজে শুধুমাত্র ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগ চালু আছে । আগামীতে সিভিল এবং কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ চালু হবে বলে জানা যায়। ভর্তি সংক্রান্ত যেকোন তথ্য জানতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন নিচের ঠিকানায় :ফোন : ৮৮-০৯১-৫২১১১ মোবাইল: ০১৭২৫৪৪৪৫৯২

বিশেষত্ব: দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যখন তথাকথিত নোংরা ছাত্ররাজনীতির করাল গ্রাসে আক্রান্ত তখন ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ সেদিক থেকে পুরোপুরি মুক্ত । এ কলেজের কয়েকজন শিড়্গার্থী বললেন ,’আমরা সকল ছাত্র- ছাত্রী এই কলুষিত ছাত্ররাজনীতির বিরূদ্ধে একএিত ’। এ কলেজ পুরোপুরি মাদক এবং ইভটিজিং মুক্ত । এ কলেজের শিড়্গার্থী সিয়াম জানালেন , “এখানে ইভটিজিং করলে কেউ ছাড় পাবে না , ইভটিজারের স্থান এই ক্যাম্পাসে হবে না ”। পাশে দাড়িয়ে থাকা আরিফ এবং মুক্তাদির সিয়ামের এই উক্তির প্রতি জোরালো সমর্থন জানান ।
বিভিন্ন দল-উপদলঃ
এখানকার ছাত্র- ছাত্রীরা বিভিন্ন দল-উপদল গ্রুপের সক্রিয় কর্মী ,তবে এসব দল-উপদল গ্রুপিং কিন্ত তথাকথিত নোংরা ছাত্ররাজনীতির নয় । এখানকার কোনো কোনো দল সাংস্কৃতিক সংগঠন করে, আবার কোনো কোনো দল করে সায়েন্স ক্লাব ,এছাড়া আরও আছে অনেক গুলো স্টাডি গ্রুপ । এরকমই একটি স্টাডি গ্রুপের সদস্য আমির হামজা বললেন,“ গ্রুপ স্টাডি ছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া সম্ভব না । ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশুনার মডেল এই স্টাডি গ্রুপগুলোতে গ্রুপ স্টাডির কারনেই এখানকার ছাত্র- ছাত্রীরা সেমিষ্টার ফাইনাল পরীক্ষায় ভাল ফল করছে”।


কিছু সমস্যা-কিছু সংকটঃ
নবীন এই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সমস্যা-সংকটের কথা জিজ্ঞাসা করতেই ছাত্র- ছাত্রীরা জানালেন, এ কলেজে তীব্র শিক্ষক সংকট বিরাজমান । এ কলেজের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম বললেন,“বর্তমানে কলেজে দুটি ব্যাচের মাত্র ১২০ ছাত্র- ছাত্রী থাকায় এবং কয়েকজন অতিথি শিক্ষক থাকায় এই শিক্ষক সংকটের ব্যাপারটি অনুভূত হচ্ছে না কিনা আগামী ২-১ বৎসরের মধ্যে যখন আরও কয়েক ব্যাচের ছাত্র- ছাত্রী ভর্তি হবে তখন অবস্থা একেবারে শোচনীয় হয়ে যাবে । তাই আমার মনে হয় সংকটের এই ব্যাপারটি শোচনীয় হওয়ার আগেই এখানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া উচিৎ ”। এই কলেজ ক্যাম্পাসে কোনো মসজিদ নেই । অথচ একটি মসজিদ থাকা অত্যন্ত জরুরী । ছাত্ররা কলেজ ক্যাম্পাসে অতিসত্বর একটি মসজিদ নিমার্ণের দাবি জানান । ছাত্রহলের ডাইনিং এ গ্যাসের সংযোগ দেওয়াও অতি জরুরী । এছাড়া মুক্তাদির-আবিরদের কাছে থেকে জানা গেলো লাইব্রেরী-ছাত্রহল এবং কলেজে বিভিন্ন দপ্তরে বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রয়োজন হলেও কর্মচারী আছেন মাত্র হাতে গোনা কয়েকজন ।

ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
শয়ন কুমার রায়

বুধবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১১

২২শে জানুয়ারি পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য শুরু



পঞ্চগড় প্রতিনিধি
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর গতকাল শনিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ফুলবাড়ি ও বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্ধা সীমান্তু দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য শুরু হয়েছে। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের বিপরীতে ফুলবাড়িতে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জী এবং বাংলাবান্ধায় কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এসময় দুইদেশের মন্ত্রী সাংসদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও কাস্টমসের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধন উপলক্ষে দুইদেশের সীমান্তেই ছিল উৎসব মুখর পরিবেশ। রঙিন পতাকা দিয়ে সাজানো হয় বাংলাবান্ধা ফুলবাড়ি সড়ক।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার, বাণিজ্য ঘাটতি পুরণ, আমদানি-রপ্তানী বাণিজ্যের সহজীকরণ এবং ব্যবসা-বাণিজ্য সমপ্রসারণের লক্ষ্যে উভয় দেশের মধ্যে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে প্রথম দিনেই ইমিগ্রেশন চালু হয়নি এ জন্য দুইদেশের নাগরিকরা ইমিগ্রেশন সহ পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে চালুর দাবি জানিয়েছেন। বেলা একটা ১০ মিনিটে ফুলবাড়িতে বাণিজ্য কার্যক্রম শুরুর ফলক উম্মোচন করেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। এর পর তিনি বাংলাবান্ধা জিরো লাইনে ফিতা কেটে ১২ সদস্য নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পঞ্চগড়-১ আসনের সাংসদ মো. মজাহারুল হক প্রধান, সংরক্ষিত আসনের সাংসদ ফরিদা আখতার হীরা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য হোসাইন আহমেদ, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জসিমউদ্দিন আহমেদ, জেলা প্রশাসক বনমালী ভৌমিক, পুলিশ সুপার মো. শাহারিয়ার রহমান ও সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. রেজাউল করিম। পঞ্চগড়ের সাংসদ মো, মজাহারুল হক প্রধান ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জীর জন্য একটি সোনার নৌকা, একমণ ইলিশ, ১০ কেজি বিশেষ মিষ্টি, ১০ কেজি তুলশী চা, ১০ কেজি গ্রীণ চা উপহার হিসেবে নিয়ে যান। স্থলবন্দরের উদ্বোধনের মূল অনুষ্ঠান ভারতের ফুলবাড়িতে অনুষ্ঠিত হয়। পশ্চিমবঙ্গে নগর উন্নয়ন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুর্খাজী ও বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বক্তব্য দেন। প্রণব মুর্খাজী তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য বৈষম্য রয়েছে বলে স্বীকার করে তিনি বলেন, এটা চলতে পারে না। এই বৈষম্য দূর করতে আমরা দুই দেশ এক সঙ্গে কাজ করছি। বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দরের চেয়ে ফুলবাড়ি- বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর অনেক সম্ভাবনাময়। কারণ ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চল ও নেপাল ভুটানের গেটওয়ে ফুলবাড়ির কাছেই শিলিগুড়ি। শিগগিরই এই বন্দর দিয়ে ইমিগ্রেশন চালু করা হবে। তিনি আরো বলেন, ভারত- বাংলাদেশের সর্ম্পক ঐতিহাসিক। বন্ধুপ্রতিম দুইদেশের পারস্পরিক আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্য বাড়ানোর পাশাপাশি সব সমস্যার সমাধানে আগ্রহী। এই বন্দর চালুর ফলে দু দেশের কলকারখানা গড়ে উঠবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে বেকার সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ভারত-বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারকের আলোকে বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি স্থলবন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হল। এই বন্দর চালুর ফলে দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি অনেকাংশে কমে আসবে। ১৯৯৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে বাংলাবান্ধা ট্রানজিট চালু হয়। আবার মহাজোট সরকারের আমলে বাংলাবান্ধা দিয়ে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালু হল। আশা করছি শিগগিরই এই বন্দর দিয়ে ইমিগ্রেশন চালু করা হবে। পশ্চিম বঙ্গের নগর উন্নয়নমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ফুলবাড়ি স্থলবন্দরের জন্য ১০ কোটি রুপির প্রকল্প নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে আট কোটি রুপি খরচ করে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। ফুলবাড়ি-বাংলাবান্ধা ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য পথ উম্মুক্ত করতে পেরে তিনি গর্ববোধ করেন। তিনি বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করে ইমিগ্রেশন চালু করার আশ্বাস দেন। তিনি ঢাকা-বাগডোগরা বিমান চালুর ওপর গুরত্বারোপ করেন। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভারত থেকে পাথরবাহী দুই ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং দুই ট্রাক তুলা ভারতে প্রবেশ করে আমদানী- রপ্তানী কার্যক্রম শুরু হয়।সাপটা চুক্তির আলোকে ১৯৯৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধায় নেপাল- বাংলাদেশ ট্রানজিট রূট চালু হয়। এতদিন এই স্থলবন্ধর দিয়ে নেপাল-বাংলাদেশের মধ্যে সীমিত আকারে পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়ে আসছিল। এই বাণিজ্য কার্যক্রম উদ্বোধনের ফলে সার্কভুক্ত দেশ ভারত, নেপাল ছাড়াও ভুটান এমনকি চীনের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সমপ্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। আর এটি হলে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর হবে বাংলাদেশের একমাত্র বহুদেশীয় স্থলবন্দর। এ জন্য সরকার আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাবান্ধায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তুলেছে। আমদানিকারক ওয়াকিল আহমেদ বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে শুধুমাত্র পাথর আমদানি করার কথা উল্লেখ রয়েছে। ফলে ভারত থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিয়েছে। উদ্বোধনী দিনে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আট টন তুলা রপ্তানী করা হবে। ভারত থেকে আসবে ৩৪ টন পাথর। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের বিভিন্ন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে নতুন করে পণ্য বাছাই করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। তাহলে কেবল এই স্থলবন্দরটি কার্যকর হবে। সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. রেজাউল করিম বলেন, বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সাথে অত্যন্ত সুবিধা ও লাভজনক অবস্থানে বাংলাবান্ধা অবস্থিত। বাংলাবান্ধা সহ এ অঞ্চলটি প্রতি বছর বন্যামুক্ত থাকে। এখান থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে ভারতের শিলিগুড়ি, ১০ কিলোমিটার দূরে জলপাইগুড়ি শহর, ৫৮ কিলোমিটার দূরে দার্জিলিং, ৬১ কিলোমিটার দূরে নেপালের কারকরভিটা এবং ৬৮ কিলোমিটার দূরে ভুটানের ফুয়েন্টসিলিং শহর। নেপাল ও দার্জিলিং-এ প্রচুর বিদেশী পর্যটক সারা বছরই আসে। বাংলাবান্ধায় ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালু হলে বাংলাদেশের সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার, পতেঙ্গা, কুয়াকাটাসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে বিপুলসংখ্যক পর্যটক সমাগম হবে। শিলিগুড়ির রপ্তানিকারক ব্রিজ কিশোর প্রসাদ বলেন, বাংলাদেশের রাজস্ব বোর্ডের প্রজ্ঞাপন সংশোধন করতে হবে। নইলে এই বন্দর কার্যকর হবে না। পাশাপাশি ইমিগ্রেশন চালু করতে হবে। ইমিগ্রেশন সহ বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালু হলে পঞ্চগড়সহ আশপাশের জেলাগুলোতে গড়ে উঠবে বিভিন্ন শিল্প কলকারখানা। আর এসব কারখানায় কর্মসংস্থান হবে এ এলাকার হাজার হাজার বেকার মানুষের। আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে পঞ্চগড়সহ গোটা উত্তরাঞ্চলের। দেশের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে ।


মোঃ শাহজালাল

সোমবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১১

পঞ্চগড় পৌরসভাঃ নাগরিক সুবিধা নিয়ে নানা প্রশ্ন

পঞ্চগড় জেলার ৫টি উপজেলা জেলার মোট জনসংখ্যা প্রায় ১২ লাখ। পঞ্চগড় জেলা শহর এলাকাই পঞ্চগড় পৌরসভা। পৌরসভার আয়তন ২১.৫০ বর্গ কিলোমিটার। ভাসমানসহ জনসংখ্যা প্রায় ৬৫,০০০(পয়ষট্টি হাজার) ভোটার সংখ্যা ২৭১৭ টি পুরুষ১৩৫৯১ জন ,নারী১৩৪২৪ জন,হোল্ডিং সংখ্যা ৭৫৯১, টি এর মধ্যে আবাসিক ৬২০৯ অনাবাসিক ১৩৮২ টি। পৌরসভার পাড়া মহাল্লা ৩১টি। ১৯৮৫ সালের ১৫ই জানুয়ারী পঞ্চগড় পৌরসভা যাত্রা শুরু করে। ২০০৫ সালে ৪ঠা মে পঞ্চগড় পৌরসভা প্রথম শ্রেণীতে উন্নত হয়।

পঞ্চগড় পৌরসভার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা : এস বিবি/বি,এফ,এস ০.৭৯৯কিঃমিঃ,আর সি,সি ৬.২৮ কিঃমিঃ, ডাব্লিউ বি এম ২.৪৬৪ কিঃমিঃ, বিটুমিনাস কার্পেটিং ৫৩.৭ কিঃমিঃ,কাঁচা রাস্তা ৩৮.০৬ কিলোমিটার।
পৌর এলাকার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শ্মশানঘাট ও কবর স্থানসহ ৬১টি।
পঞ্চগড় পৌরঃ শহরে সরকারী-বেসরকারী অধিকাংশ অফিস আদালত অবস্থিত। এ শহর এলাকায় সরকারী-বেসরকারী স্কুল কলেজ মাদ্রাসার সংখ্যা প্রায় ৩৫টি, এছাড়াও আরও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। শহরে পাকা ড্রেন ২৪.৮৭ কি .মি ,কাঁচা ড্রেন ৫০.৪০ কিঃ মিঃ।
অধিকাংশ স্থানে ডাস্টবিন না থাকায় পৌর নাগরিকরা তাদের বাসা বাড়ির ময়লা ড্রেনে ফেলে দেয়। নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কারের প্রয়োজন থাকলেও পৌর কর্তৃপক্ষ নিয়মিত পরিস্কার করতে পারছেনা। ড্রেনে ময়লা ফেলার কারণ উল্লেখ্য করে শহরের ইসলামবাগ মহল্লার বাসিন্দা এ হোসেন রায়হান বলেন পর্যাপ্ত ডাস্টবিন নেই, তাই ডাস্টবিন খুঁজে খুঁজে ময়লা ফেলা সম্ভব হচ্ছে না। আর ড্রেনে স্লাব নেই তাই মানুষ ড্রেনে ময়লা ফেলতে বাধ্য হচ্ছে। নুতন বসি- এলাকার সখিনা বেগম বাসা বাড়ির আর্বজনার পলিথিন ব্যাগ রাস্তায় ছুঁড়ে ফেললেন দেখে মনে হয় পুরা রাস্তায় যেন ডাস্টবিন ।একই এলাকার জাহিরুল ইসলাম নাগরিক সুবিধার কথা উল্লেখ করে বলেন রাতে মশার অত্যাচার আর দিনে মাছি এ নিয়ে আমরা পৌরবাসী আছি।

ধাক্কামারা এলাকার মার্শাল ডিষ্ট্রিলারি মসজিদের ইমাম আরাফাত ইদ্রিস বলেন ড্রেন নির্মানের কয়েক দিনের মাথায় ড্রেন ভেঙ্গে শেষ। বাড়ীর সামনে ড্রেন হলেও স্লাব দেওয়া হয়নি ।তাই যে কোন সময় শিশু সহ যে কোন বয়সের মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হতে পাড়ে। ইসলামবাগ এলাকার বাসিন্দা অধ্যক্ষ সেলিমউদ্দীন বলেন পৌরসভা যে ভাবে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার কথা সে ভাবে পৌর কর্তৃপক্ষ রাখে না । পৌর এলাকায় ময়লা আবর্জনা যেখানে সেখানে পড়ে থাকায় পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে । লোকবল বাড়ানোসহ নির্দিষ্ট স্থানে সাইনবোর্ড লাগিয়ে আবর্জনা ফেলার পরামর্শ দেন তিনি। পঞ্চগড় জেলার দ্রত বানিজ্যিক প্রসার ঘটার ফলে শহরের জনসংখ্যা দ্রত বাড়ছে। পৌরসভার সাবেক কমিশনার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন পৌর সভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা পরিকল্পনাটি সুদূর প্রসারী নয়। তিনি আক্ষেপ করে বলেন আমার বাড়ীর সামনে যে ড্রেন হয়েছে তা রাস্তা থেকে অনেক উঁচু এবং যে দিকে ঢালু হওয়ার কথা সে দিকে উঁচু করে দেওয়ায় ময়লা পানি জমে আছে আর মশা মাছির জন্ম নিচ্ছে। বেশির ভাগ ড্রেন সরু হওয়ায় শহরের ভবিষ্যৎ ড্রেনেজ পরিকল্পনা পৌরবাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে।

রবিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১১

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বাবুগঞ্জ উপজেলা, বরিশাল

বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নে বাহেরচর গ্রামে অবস্থিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি উপজেলার একপ্রান্তে অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটির তিন দিক নদী দ্বারা বেষ্টিত। যোগাযোগের বাহন হচ্ছে ট্রলার, নৌকা। নদীভাঙ্গনের জন্য রাস্তা ঘাট ভালো নয়।

মৌলিক তথ্যঃ
প্রায় ৬ একর জমির উপর ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। দুইতলা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির বেড সংখ্যা ৩১টি। স্টাফদের থাকার জন্য আবাসিক ব্যবস্থা আছে। UH&FPO, কনসালটেন্ট সার্জন, মেডিকেল অফিসার মেডিকেল অফিসার পদ ১৪টি।বর্তমান কোন শূন্য পদ নাই। নার্সিং সুপার ভাইজার ২ জন সহ স্টাফ নার্স আছে ১০ জন। কেন্দ্রটির মোট কর্মকর্তা কর্মচারীর সংখ্যা ১০৮ জন। এর মধ্যে কর্মরত আছেন ৯১ জন। ১৭টি পদ শূন্য। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে MCH ইউনিট-১টি, IMCI কক্ষ ১টি, EPI কক্ষ ১টি, ORT কর্ণার ১টি এবং ডিসপেনসারী কক্ষ আছে ১টি। এখানে অন-বিভাগ এবং বর্হিবিভাগের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়।

ইতিবাচক দিকঃ
ছায়াঘেরা, কোলাহল মুক্ত নির্জন স্থানে প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটির পরিবেশ পরিচ্ছন্ন। নিরাপদ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া চালু আছে। সে্বা,স্বাস্থ্য, শিক্ষা সম্পর্কিত ফিল্ম শো দেখানো হয় নিয়মিত। সেবাপ্রদানকারীদের ব্যবহার ভালো বিনিমিয় মূল্য নেয় না, রোগীদের প্রয়োজন অনুযায়ী ঔষধ দেয়া হয়। কোন ধরনের টেষ্টের ফি নেয়া হয় না। রেফারেল প্রক্রিয়া চালু আছে। ভর্তি ফি নেয়া হয় না এবং ভর্তি রোগীদের নার্স কর্তৃক ঔষধ সেবন করানো হয়।

সীমাবদ্ধতাঃ
যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ, এ জন্য রোগীর সংখ্যা কম। ডাক্তারদের উপস্থিতির সময় ঠিক নাই। ডাক্তাররা এখানে থাকেন না। রাতের বেলা প্রয়োজনেও ডাক্তার পাওয়া যায় না। এ্যাম্বুলেন্স আছে কিন্তু অকেজো এবং ড্রাইভার নেই। EPI টেকনিশিয়ান পদ শূন্য। স্টোর কিপার, ফার্মাসিস্ট এর ২টি পদ শূন্য। উপরস্থ কর্তৃপক্ষের তদারকি নেই। ঔষধ আসতে সময় লাগে।জেনোরেটরের ব্যবস্থা নেই। ভর্তি রোগীদের খাবারের মান খুবই খারাপ।

জনগণের মতামতঃ
স্থানীয় জনগণের কেন্দ্রেটি সম্পর্কে ধারণা বিরূপ। জনগণ কেন্দ্রেটির অবস্থান পরিবর্তন করতে চায়। রোগী আনার ব্যবস্থা নেই, নদী পথে রোগী আনার জন্য বিকিল্প ব্যবস্থা চালুর দাবী জনগণের। ভর্তি রোগী মো: আসলাম বলেন যে খাবার দেয় তা রোগীরা খেতে পারে না। বেলা ২টার পর কোন ডাক্তারকে পাওয়া যায় না, সবাই চলে যায়। অপারেশনের জন্য জেনারটের চালু সহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের তদারকির ব্যবস্থা করা দরকার। উপরস্থ কর্তৃপক্ষের তদারকি থাকলে সেবার মান পরিবর্তন হবে এ কথা জনগণের।
সেবাদানকারীর মতামতঃ
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মর্তুজা আলম বলেন, ভৌগলিক অবস্থানের জন্য রোগীর সংখ্যা কম। যারা এখানে সেবা নিতে আসনে তাদেরকে বিনিময় মূল্য ছাড়াই সেবা দেয়া হয় এবং সরকারি সাপ্লাই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ঔষধ দেয়া হয় শূন্যপদ পূরণের জন্য উপরে চাহিদা দেয়া আছে।নতুন নিয়োগের মাধ্যমে ৩ জন মেডিকেল অফিসার যোগ দিয়েছে কিন্তু কতদিন থাকবে জানিনা।
যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ সহ জীবন যাত্রার মান খারাপ। প্রয়োজনের সময় কিছুই পাওয়া যায় না কারণ নদী ভাঙ্গন এলাকা। একজন ডাক্তারের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দিতে পারা যায় না বিধায় ধরে রাখা যায় না। রোগীদের খাবারের বিষয়ে আমাদের কিছুই করার নেই কারণ প্রতিষ্ঠানের শুরু থেকেই একটি পরিবার খাবার দেয়ার দায়িত্বে আছেন।জনগণের সেবার জন্য প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠানের স্থানটি পরিবর্তন হলে ভালো হতো জনগনকে সেবা দেয়া যেত মানসম্মতভাবে।

পর্যবেক্ষণঃ
সেবাগ্রহিতদের সাথে ডাক্তার ভালো ব্যবহার করেন।বিনিময় মূল্য নেয় না। যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ, রোগীর সংখ্যা কম, ডাক্তার সহ কোন কর্মচারীরা সময় মত আসে না। মনিটরিং বোর্ড আছে তথ্য হালনাগাদ নয়। ভর্তি রোগীদের খাবার মান খুবই খারাপ, রোগীর বেড, ময়লা ফেলার গামলা, বেড প্যান অপরিস্কার। ওয়ার্ড পরিদর্শনে ডাক্তার সঠিক সময়ে যায় না। বর্হিবিভাগ প্রতিদিন গড়ে একঘণ্টা থেকে দুই ঘন্টা খোলা থাকে।সবাপ্রদানকারীরা তাদের নির্দিষ্ট পোশাক পরিধান করেন না। উপরস্থ কর্তৃপক্ষের তদারকি নাই বিধায় যে যার মতন করে দায়িত্ব পালন করেন।

সুপারিশঃ
• যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সহ প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহ করতে হবে।
• নদীপথে রোগী আনার ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
• সেবাপ্রদানকারীদের ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে যাতে করে প্রয়োজনে রোগীরা ডাক্তারের সেবা নিতে পারে।
• উপরস্থ কর্তৃপক্ষের নজরদারিসহ তদারকি বাড়াতে হবে।
• রোগীদের খাবার মান পরিবির্তন করতে হবে।
• অপারেশনসহ রাতে বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে জেনারেটর চালু করতে হবে।এসব সমস্যাগুলো পরিবর্তন হলে অনেকাংশে রোগীর যাতায়াত বাড়বে ।

বৃহস্পতিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০১১

পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালঃ চিকিৎসা সেবাদানকারী প্রধান প্রতিষ্ঠান

পঞ্চগড় সদর হাসপাতাল ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, মহকুমা স্বাস্থ্য কেন্দ্র হিসাবে। সে সময় পঞ্চগড় দিনাজপুর জেলার অধিনস্ত মহকুমা ছিল ১৯৮৩ সালে পঞ্চগড় জেলা ঘোষণার সাথে সাথে হাসপাতালটি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৮ সালে হাসপাতালটির নামকরণ করা হয় পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতাল। ২০০৩ সালে পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালের ভবন উন্নতিসহ ১০০ শয্যোর হাসপাতাল ঘোষণা করা হয়।

হাসপাতালের ইতিবাচক দিকসমূহঃ পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালে ইনডোরে প্রতিদিন কমপক্ষে ৭০ জন চিকিৎসা সেবা নেয়। জরুরী বিভাগে বিভিন্ন জটিল শারীরিক সমস্যা নিযে কমপক্ষে প্রতিদিনে ৩৪ জন রোগী সেবা নিয়ে থাকেন। এছাড়াও আউটডোরে কমপক্ষে প্রতিদিন ৩০৬ জন রোগী নানা অসুখ বিসুখের চিকিৎসা নিয়ে থাকে। রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি সরকারীভাবে ঔষধ, ব্যান্ডেজ, তুলা, মলম, স্যালাইন, ইনজেকশন, সিরিঞ্জ, খাওয়ার স্যালাইন, রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা মলমূত্র পরীক্ষা, এক্স-রে, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রাম করা হয়।
পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালে কিছু রোগের অপারেশন করা হয়। উল্লেখযোগ্য- হার্নিয়া, এপেনডিক্স, টিউমার, বিভিন্ন প্রকার ঘা, ইউট্রাসের অপারেশন সহ ছোটখাট আরও অনেক অপারেশন করা হয়। প্রকাশ মাতৃত্বকালীন সকল চিকিৎসা দেওয়াসহ সিজার করা হয়। খাদ্য বিষক্রিয়ায় বা বিষপানে অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
কোন রোগীকে পঞ্চগড় জেলার বাইরে উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন হলে রোগীকে দ্রুত কম খরচে পার্শ্ববর্তি জেলার উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্র পৌছানোর জন্য পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে।
আত্মহত্যা বা হত্যা কিংবা কোন প্রকার অপমৃত্যুর পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ময়না তদন্তের ব্যবস্থা রয়েছে। রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য বছরের প্রতিটি দিনই সার্বক্ষণিক হাসপাতালের জরুরী চিকিৎসা কেন্দ্রটি খোলা থাকে ও সেবা প্রদান করে। ইনডোরের চিকিৎসাধীন রোগীদের কিছু ঔষধ সরকারী ভাবে দেওয়া হয় এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের সূচিকিৎসার স্বার্থে ব্যবস্থা পত্র দিয়ে থাকে।
ইনডোরের রোগীরা সকালের নাস্তাসহ সকল খাবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ফ্রি পেয়ে থাকে। সে কারনে অসহায় ও দুস্থ রোগীদের চিকিৎসাধীন অবস্থায় খাদ্যের জন্য সমস্যায় পরতে হয় না। প্রতিদিন রোগীদের বিছানাপত্র পরিস্কার রাখার জন্য বেড সীট পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। রোগীদের আনুসাঙ্গিক ময়লা আবর্জনা অপসারনের জন্য সুইপার আছে। রোগীদের রাতের বেলা সেবা নিশ্চিত করতে জরুরী বিভাগে একজন চিকিৎসক কর্মরত থাকে এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন নার্স ডিউটি পালন করে।
সীমাবদ্ধতাঃ হাসপাতালের রোগীদের বিভিন্ন প্রকার ঔষধ প্রয়োজন হলেও সকল প্রকার ঔষধ সরকারীভাবে সরবরাহ না থাকায় সাধারন মানুষকে সমস্যায় পড়তে হয়। পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালে ডাক্তারের পদ ৩৫টি থাকলেও কর্মরত ডাক্তার আছেন সরকারীভাবে মাত্র ০৩ জন। তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীর পদের সংখ্যা ৬৭ টি, কর্মরত আছেন ৪০ জন। আধুনিক সদর হাসপাতালে মোট সেবাদানকারীর পদের সংখ্যা ১৩৪ জন, সেবাদানকারী রয়েছেন মাত্র ৬৮ জন যা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। এছাড়াও রোগীদের সার্বক্ষনিক সুবিধার্থের জন্য একটি জেনারেটর থাকলেও দীর্ঘদিন যাবৎ তা অচল হয়ে আছে এবং জরুরী ভিত্তিতে রোগীদের সু-চিকিৎসার জন্য জেলার বাহিরে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ০২টি এ্যাম্বুলেন্স থাকলেও ০১টি একেবারে অচল। এ ব্যপারে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। লক্ষ লক্ষ টাকার সরঞ্জামাদি হাসপাতালে থাকলেও তা রক্ষনাবেক্ষনের কোন সু-ব্যবস্থা নেই। জেলা শহরের একমাত্র আধুনিক হাসপাতালটিতে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক রোগীর সমাগম ঘটে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক সুইপারের অভাবে হাসপাতালের সার্বক্ষনিকভাবে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
জনগণের মতামতঃ ডাক্তারের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ জনবল বাড়াতে হবে। হাসপাতালের নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কর্তৃপক্ষকে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সরকারী ঔষধ সরবরাহের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে দুর্নীতি ও চুরি প্রতিরোধ করতে হবে। ইনডোর ও আউটডোর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। অফিস চলাকালীন সময় বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টিভ ডাক্তারের রুমে যেতে পারবে না। অফিস সময়ে ডাক্তারের প্রাইভেট প্রাকটিস নিষিদ্ধে আইন পাস করতে হবে।
সেবাদানকারীর মতামতঃ পদভিত্তিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রদানসহ জনবল বাড়াতে হবে। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার নিমিত্তে সুইপার নিয়োগ এবং হাসপাতালের বিভিন্ন মূল্যবান সরঞ্জামাদি রক্ষণাবেক্ষনের জন্য নিরাপত্তা প্রহরী নিয়োগ করতে হবে। বিভিন্ন প্রকার যন্ত্রপাতি তাৎক্ষণিকভাবে মেরামতের জন্য অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান নিয়োগ করতে হবে।

মোঃ শাহজালাল
সহযোগিতায়ঃ প্রিয় রঞ্জন সরকার,ও রওশনারা শিমু