বৃহস্পতিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০১১

যৌতুক প্রথা ও নারী নির্যাতন

যৌতুক প্রথা একটি ভয়াবহ সামাজিক অভিশাপ। সুদূর প্রাচীন কাল থেকেই কন্যার পিতারা এ যৌতুক প্রথার কবলে পতিত হয়েছে। মেয়েরা শ্বশুরবাড়ীতে এর জন্য বহু নীপিড়ন সহ্য করছে। যতই দিন যাচ্ছে সভ্যতা বিকশিত হচ্ছে ততই যেন যৌতুক প্রথার প্রকোপ ও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

যৌতুক প্রথার নিষ্ঠুর অত্যাচার, নারী নির্যাতন নিত্য খবর। 'পণ' হিসাবে মোটা অংকের নগদ টাকাতো আছে তার সাথে আরও মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী, টিভি,ফ্রিজ, ইত্যাদি। এমনকি ফ্লাটবাড়ী, কিংবা উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশ যাবার খরচের কথাও কোথাও কোথাও এসে পড়ে । কন্যাদায়গ্রস্ত পিতারা হয়ত কন্যার সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের কথা চিন্তা করে তার যথাসর্বস্বকরে থাকে। কিন্তু কোন কারণে যদি পিতারা প্রতিশ্রুতি ঠিকমত পন্যসামগ্রী পাত্র পক্ষকে না দিতে পারে তাহলে মেয়ের উপর চলে নিষ্ঠুর অত্যাচার নির্যাতন এমনকি হত্যা করার চক্রান্ত। পণ প্রথার পরিনাম হচ্ছে মারাত্বক। বর্তমান যৌতুক এক জায়গায় স্থির নয়। এক শ্রেণীর মানুষের সহজ অর্থ লোভ এ যৌতুক ও পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে।

এ নিষ্ঠূর যৌতুক প্রথা বিলোপ করতে হবে এটা যেমন সমাজের দাবী তেমনি সরকারের দাবী।সরকার যৌতুক প্রথা বিলোপ করতে বহুদিন থেকেই উদ্যোগী হয়েছেন। এর জন্য আইন ও প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু তার কতটুকুই বা কার্যকরী হয়ছে? এ ব্যাপারে সরকার এবং দেশের জনসাধারণ উভয় পক্ষই সমভাব দায়ী।

যে দেশের নারী সমাজ এখনো তাদের স্বামীর নাম মুখে আনতো না, সেই সমাজ থেকেই যৌতুক প্রথা ও নারী নির্যাতন তুলে দেয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার নয়। কিন্তু নারীর মুক্তির জন্য চাই নারী আন্দোলন, নইলে এ প্রথার বিষময় থেকে রেহাই নেই। আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হলে সমাজের প্রতিটি নারীকেই এগিয়ে আসতে হবে।

তবে একটি আশার কথা, আমাদের নারী সমাজ একেবারে নীরব হয়ে নেই। তারাও এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে এখন এর সাথে সরকারী আইন যুক্ত হলেই যৌতুক প্রথা এদেশ থেকে অতিদ্রুত উঠে যাবে। আমাদের সকলের কামনা, দেশ থেকে এ অভিশাপ প্রথা উঠে যাক, বাঁচুক নারী সমাজ, বাঁচুক কন্যাদায়গ্রসত্ম পিতা-মাতা।


রাজশাহী থেকে
নিলুফার ইয়াসমনি

কোন মন্তব্য নেই: